
কৌশিক বসু , দুর্গাপুর : এ যেন ওয়েব সিরিজের ক্রমাগত ভার্সান , সিজন ১,২,৩ । থামতেই চাইছে না ধানবাদের ওয়াসেপুরের কুখ্যাত গ্যাংওয়ার। বুধবার রাতে এই গ্যাংওয়ারের জেরে ফের এক গুলিবিদ্ধকে ভর্তি করা হল দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের এক বেসরকারী হাসপাতালে। গুরুতর আহত ওই ব্যক্তির নাম মহ: আনোয়ার খান , বয়স ৩১। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ দুর্গাপুরের এই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আহতকে। মাথায় গুলি লেগেছে , চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে , অবস্থা সংকটজনক বলে জানা গেছে। ধানবাদের ব্যাঙ্ক মোড় থানার ভুলি আউটপোস্টের পুলিশ এসেছিল ঘটনার তদন্তে , সঙ্গে ছিল সিটি সেন্টার ফাঁড়ির পুলিশ আধিকারিক। আহতর বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশ।

বুধবার রাতে ধানবাদের ওয়াসেপুরে বাইপাস রোডের ধারে এক নার্সিংহোমের পাশে একটি রেস্তোরায় মোহাম্মদ আনোয়ার খান সহ চারজন ডিনার সারছিলেন। সে সময় দুই অজ্ঞাত পরিচয় যুবক এসে আনোয়ার খানকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। মাথায় গুলি লাগে আনোয়ারের। তড়িঘড়ি আনোয়ারকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখান থেকে দুর্গাপুরের এই হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার কথা জানান ডাক্তাররা। বৃহস্পতিবার ভোরে সংকটজনক অবস্থায় আনোয়ারকে ভর্তি করা হয় সিটি সেন্টারের এই হাসপাতালে, জানালেন আহতর শ্যালক আনোয়ার হোসেন।

ধানবাদ পুলিশের পক্ষ থেকে সাব-ইন্সপেক্টর দশরথ প্রসাদ সাউ জানান যে গ্যাংওয়ারের কারনেই ঘটেছে এই ঘটনা। তিনি আরো বলেন যে তিন বন্ধু আনোয়ারের সঙ্গে ছিল ,তাদের কারোর ষড়যন্ত্র হতে পারে, তবে পুরোটাই তদন্ত সাপেক্ষ। আহত মোহাম্মদ আনোয়ার, ইকবাল খানের গোষ্ঠীর বলে জানান এই পুলিশ আধিকারিক।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এই ইকবাল খানকেও মাসখানেক আগে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুর্গাপুরের অপর এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেই গুলি কাণ্ডে একজনের মৃত্যু হয়েছিল। ইকবাল খান, ওয়াসেপুরের অন্যতম বাহুবলি ফাহিম খানের ছেলে। এই ফাহিম খানের সঙ্গে তার ভাগ্নে প্রিন্স খানের বিবাদ গত কয়েক বছরের। ওয়াসেপুরের যাবতীয় গ্যাংওয়ার এখন সীমাবদ্ধ ফাহিম খান ও প্রিন্স খান, এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। মূলত ক্ষমতা দখলের লড়াই ।ধানবাদের পুলিশ প্রশাসন ও কার্যত নাজেহাল এই দুই বাহুবলির লড়াই থামাতে। প্রায় দিনই এই গ্যাংওয়ারে রক্ত ঝরছে , প্রান যাচ্ছে মানুষের। ওয়াসেপুরের গ্যাংওয়ার কিভাবে থামানো যায় , এটাই এই মুহুর্তে ধানবাদ পুলিশের সবচেয়ে বড় মাথাব্যাথার কারন।