
৯৯ নিউজ বাংলা ডেস্ক: বার্ষিক আয়ে শীর্ষে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। তবে শতাব্দীপ্রাচীন দল কংগ্রেসকে ছাপিয়ে গেল তৃণমূল। বিজেপির ঠিক পরেই জায়গা করে নিয়েছে বামলার শাসকদল। ২০২১-২২ অর্থবর্ষের রিপোর্ট সামনে এনে এমনটাই জানাল নির্বাচন কমিশন। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের দাবি, চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে নিশ্চিত ভাবেই এটা বড় খবর। বিশেষত এই তথ্য যে হেতু প্রকাশ্যে এলো এমন একটা সময়ে, যখন বেশ কয়েকটি দল বিজেপিকে টেক্কা দিতে কংগ্রেস-মুক্ত বিরোধী জোট গড়ার কথা ভাবছে।
কমিশনের দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, গত পাঁচ বছরে তৃণমূলের আয় বেড়েছে ৯০ গুণ! যেখানে কংগ্রেসের আয় কমেই চলেছে ক্রমে। যদিও আটটি জাতীয় দলের বাকি সাতটিরই ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে বিজেপি। কমিশনের দেওয়া তথ্য বলছে, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে সাতটি দলের সম্মিলিত বার্ষিক আয়ের চেয়েও বেশি আয় করেছে বিজেপি।
কমিশন চলতি সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলির বার্ষিক আয়ের যে হিসেব প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূল কংগ্রেসের বার্ষিক আয় ৫৪৫.৭৪ কোটি টাকা। যা দেশের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের থেকে বেশি। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে কংগ্রেসের বার্ষিক আয় ৫৪১.২৭ কোটি টাকা। এই মুহূর্তে দেশে জাতীয় দল আটটি বিজেপি, তৃণমূল, কংগ্রেস, বিএসপি, এনসিপি, সিপিআই, সিপিএম এবং এনপিপি। সম্মিলিত ভাবে এই আটটি দল গত অর্থবর্ষে অনুদান, চাঁদা, সংগ্রহ, সাবস্ক্রিপশন বাবদ মোট ৩ হাজার ২৮৯ কোটি টাকার সামান্য বেশি আয় করেছে। এর মধ্যে শুধু বিজেপিরই বার্ষিক আয় ১ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা। যেখানে বাকি সাতটি দলের আয়- ১ হাজার ৩৭২ কোটি টাকা!
বিজেপির ঝুলিতে এত সম্পদ এলো কী ভাবে? দলগুলির দেওয়া নিজস্ব অডিট রিপোর্টই প্রকাশ করেছে কমিশন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, গেরুয়া পার্টির এই বিপুল আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস হিসেবে স্বেচ্ছা অনুদানকে উল্লেখ করা হয়েছে। হাজার কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড বিক্রি-সহ সেই অনুদান বাবদ আয় ১৭৭৫ কোটি টাকার। পরিসংখ্যান বলছে, বিজেপির বার্ষিক আয়ের অর্ধেকেরও বেশি এসেছে নির্বাচনী বন্ড বিক্রি করেই। দলে চাঁদা এবং সাবস্ক্রিপশন বাবদ গেরুয়া শিবির ঘরে তুলেছে মাত্র ৬.৩১ কোটি টাকা।
রাজনৈতিক দলগুলি বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থার ‘অনুদান’ গ্রহণের ক্ষেত্রে যাতে স্বচ্ছতা বজায় রাখে সেই কারণেই ২০১৭-য় ‘নির্বাচনী বন্ড’ ব্যবস্থা চালু করা হয়। স্টেট ব্যাঙ্কের থেকে এই বন্ড কিনে যে কেউ তার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিতে পারে। কমিশনের ওয়েবসাইটে বন্ড সংক্রান্ত যে হিসেব জমা দিয়েছে দলগুলি, তাতে জানা যাচ্ছে ২০১৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত বিক্রি হওয়া নির্বাচনী বন্ডের টাকা মূলত গিয়েছে বিজেপির তহবিলে। কংগ্রেস ও তৃণমূল যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকলেও গেরুয়া শিবিরের তুলনায় তা অনেকটাই কম।
তবে বার্ষিক আয় ক্রমশ বাড়ছে ঘাষফুল শিবিরেরও। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে তৃণমূলের বার্ষিক আয় ছিল ৫.১৬ কোটি টাকা। এখন সেটাই ৯০ গুণ বেড়ে প্রায় সাড়ে পাঁচশো কোটি টাকা! মাঝে দু’বছর আয় কমেছিল তৃণমূলের। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে আয় ছিল ৭৪.৪১ কোটি টাকা। সেই হিসেবে এবার দলের আয় বেড়েছে সাত গুণ!