
কৌশিক বসু,দুর্গাপুর : রাত পোহাতেই দুর্গাপুরের ইস্পাত কলোনীর মার্কনী এ্যাভিনিউয়ের ব্যবসায়ীর বাড়ীতে মঙ্গলবার রাতের বোমাবাজি নিয়ে শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক তর্জা। বিভিন্ন মহলে হাওয়া উঠেছে যে আসলে এটি প্রাক্তন বোরো চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ হালদার ও তৃণমূল ব্লক সভাপতি রাজীব ঘোষের লড়াই। বিশেষ করে বিরোধীরা নেমে পড়েছে জোর কদমে। আর বিরোধীদের ইন্ধন জুগিয়েছে ব্যবসায়ী অরূপ ওরফে বাবু পালের একটি বক্তব্য। তিনি “অন ক্যামেরা” বলেছেন যে তার বাড়ীতে হামলা চালানোর জন্য দায়ী রমাপ্রসাদ হালদার ও জনৈক বান্টি সিং। এরপরেই শহর জুড়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক আলোড়ন। বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা লক্ষন ঘড়ুইয়ের অভিযোগ, শান্ত শহর দুর্গাপুরকে অশান্ত করছে শাসক দল। শহরে গুলি চলছে,বোমা পড়ছে,পুলিশ কোথায় , প্রশ্ন বিধায়কের।

অন্যদিকে গোষ্ঠীদ্বন্দের তত্ব ওড়ালেন রমাপ্রসাদ হালদার ও রাজীব ঘোষ,দুজনেই। রমাপ্রসাদ বাবু বলেন যে এটি মুলত বাড়ীওয়ালা-ভাড়াটের গন্ডগোল। এটি তাঁর ওয়ার্ডের মধ্যেও পড়ে না। কোর্টের নির্দেশের পরেও ভাড়াটে দোকানদার , দোকান না ছেড়ে দেওয়ায় বাড়ী ওয়ালার সাথে সমস্যা হয়েছে,এখানে রাজনীতির কোন যোগ নেই বলে মন্তব্য রমাপ্রসাদ বাবুর এবং এই ঘটনায় তাঁর যে দুরদুরান্তেও কোন যোগাযোগ নেই,তা স্পষ্ট করেন প্রাক্তন বোরো চেয়ারম্যান। শুধু তাই নয়,যার সঙ্গে গোষ্ঠীদ্বন্দ বলে প্রচার করা হচ্ছে,অর্থাৎ ব্লক সভাপতি রাজীব ঘোষ তাঁর খুব ভাল বন্ধু বলে উল্লেখ করেন রমাপ্রসাদ বাবু।
অন্যদিকে প্রায় একই বক্তব্য তৃণমূল ব্লক সভাপতি রাজীব ঘোষের। তিনিও বলেন যে এটি মূলত বাড়ীওয়ালা-ভাড়াটের গন্ডগোল,এর সাথে তৃণমূলের কোন যোগ নেই। তিনি পুলিশকে অনুরোধ জানিয়েছেন যে অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। তিনি ও রমাপ্রসাদবাবু যে দীর্ঘদিনের বন্ধু, একথাও বেশ জোর দিয়ে বলেন তিনি। অর্থাৎ এক্ষেত্রেও গোষ্ঠীদ্বন্দের সম্ভাবনা ফুৎকারে ওড়ালেন তিনি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, চন্ডীদাস বাজারে একটি কাপড়ের দোকানকে কেন্দ্র করে ঝামেলার সুত্রপাত। দোকানটি আদতে বাবু ওরফে অরূপ পালের। দীর্ঘদিন ধরে ওই দোকানের ভাড়াটে দোকান না ছাড়ায় আদালতে মামলা হয়। সেই মামলার রায় অনুযায়ী দোকানটি বেশ কিছুদিন আগেই খালি করার কথা। তা না করে ওই ভাড়াটে ব্যবসায়ী মঙ্গলবার দোকানটি ফের খুললে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। একদল লোক ভাঙচুর চালায় কাপড়ের দোকানে। এই ঘটনার পর মঙ্গলবার রাতে দোকানের মালিক বাবু পালের মার্কনী স্থিত আবাসনে বোমাবাজির অভিযোগ সামনে আসে। দুপক্ষের এই দফায় দফায় ঝামেলায় নাম জড়ায় রমাপ্রসাদ হালদার ও রাজীব ঘোষের, স্বভাবতই শুরু হয়ে যায় গোষ্ঠীদ্বন্দের তত্ব।
রাতে বোমাবাজির অভিযোগের পর ঘটনাস্থলে এসিপি তথাগত পান্ডের নেতৃত্বে পৌঁছায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। এসিপি বলেন যে দুইপক্ষের মধ্যে একটি ঝামেলা আছে,তবে কে বোমা মেরেছে বা আদৌ মেরেছে কিনা তা তদন্ত সাপেক্ষ।