
নম্রতা সামন্ত, ৯৯ বাংলা নিউজ ডেস্ক : ২২ এর প্রায় শেষে। ২রা ডিসেম্বর ভয়াবহ বিস্ফোরণের তীব্রতায় কবলে এক গ্রাম।অকুস্থল, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর খাসতালুক হিসেবে পরিচিত পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর-২ ব্লকের অর্জুননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের নাড়য়াবিলা গ্রাম ৷সেইদিনের ভোরের আলোতে বাংলা দেখেছিল, বিস্ফোরণের ভয়াবহতার ধ্বংসাবশেষ৷ ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা সহ তিনজনের দেহ৷ তদন্তে নেমে সূত্রের মাধ্যমে জানা গিয়েছিল, প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক ঠাসা ছিল৷ তারই জেরে বিস্ফোরণের তীব্রতায় উড়ে যায় বাড়ির ছাদও৷
এক মাস এক সপ্তাহের ব্যবধানে রবিবার সন্ধ্যায় ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা বীরভূমের রদিপুর গ্রামের একটি খেলার মাঠ থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে জেলা পুলিশ৷ পুলিশি অভিযানে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরকের তালিকায় রয়েছে ৩ হাজার ডিটোনেটর, ৮০০ জিলেটিন স্টিক ও ১০০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট! এই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকের ‘মালিক’ কে, সে বিষয়ে পুলিশ এখনও অন্ধকারে৷ দুয়ারে পঞ্চায়েত ভোট৷ এমন আবহে সন্ত্রাস-খ্যাত বীরভূম থেকে এই বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা ভাবিয়ে তুলেছে জেলা পুলিশকেও৷ প্রশ্ন উঠছে, বাংলা তবে কি এখনও বারুদের স্তুপের ওপরেই দাঁড়িয়ে?
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘কারা, কি উদ্দেশ্যে এই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক এখানে নিয়ে এসেছে তা স্পষ্ট নয়৷ তবে বিস্ফোরণ কিংবা কোনও হামলার জন্যই যে এগুলি মজুত করা হচ্ছিল তা স্পষ্ট৷ তদন্ত শুরু হয়েছে৷ সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷’’ প্রাথমিকভাবে জেলা পুলিশের অনুমান, এই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ঝাড়খণ্ড থেকে আনা হয়েছে৷ এগুলি বীরভূমের জন্যই আনা হয়েছিল নাকি বীরভূম থেকে রাজ্যের অন্যত্র ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আমদানি করা হয়েছিল, তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা৷
বস্তুত, ভূপতিনগরের ওই হামলার ঘটনার পরের দিনই কাঁথিতে ছিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা৷ তারই পূর্বে ওই বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে জোর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে৷ বিরোধীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটের আগে এলাকায় এলাকায় সন্ত্রাসের আবহ তৈরি করতে বারুদ মজুত করছে শাসক৷বীরভূম থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার যেন তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল৷ ঘটনার নেপথ্যে কারা রয়েছে, পুলিশ অবশ্য তা এখনও স্পষ্ট করেনি৷ খোঁজ চলছে, উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকের ‘মালিকের’৷