
৯৯ বাংলা ডেস্ক , লাউদোহা : ইছাপুরের ভীমেশ্বর মন্দির । এখানে মাটি ফুঁড়ে শিবলিঙ্গের আবির্ভাব ঘটেছিল। মন্দিরের সাথে জড়িয়ে আছে পঞ্চপান্ডবদের আগমন। ভীমের শিবলিঙ্গ দর্শনের লোককথা। দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের ইছাপুর পঞ্চায়েতের পাটশাওড়া গ্রাম ঢোকার মুখে তেমাথা রাস্তায় পাশে রয়েছে ভীমেশ্বর মন্দির। মন্দিরের শিবলিঙ্গ ভীমেশ্বর শিব নামে ভক্তদের কাছে পরিচিত।
ভগ্ন, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া মন্দির সংস্কার করে সেখানে এখন তৈরি হয়েছে নতুন মন্দির। স্থানীয় ও ভক্তদের দাবি, প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে এখানে মাটি ফুঁড়ে শিবলিঙ্গের আবির্ভাব ঘটে। সেই লিঙ্গকে ঘিরে পরবর্তীকালে গড়ে ওঠে পাথর দিয়ে নির্মিত শিব মন্দির। মন্দির নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছিল চৌকা আকৃতির লেটেরাইট পাথর। মন্দির নির্মাণের পর কেটে গেছে বহু শতাব্দী।সময়ের কারণে পাথরের তৈরি সেই মন্দির ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। তবে এখনো সেখানে পুরনো মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ তথা চৌকা লেটেরাইট পাথর ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে মন্দির এলাকায়। ধ্বংসাবশেষ দেখে পুরাতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের মত মন্দিরটি প্রাচীন তবে ঠিক কোন সময় মন্দিরটি তৈরি হয়েছিল তা বলা সম্ভব নয় ।
এই মন্দিরটি যে প্রাচীন সেই বিষয়ে কারো কোনো সংশয় নেই। জনশ্রুতি রয়েছে মহাভারতে আত্মগোপনের সময় পঞ্চপান্ডবরা পাণ্ডবেশ্বরের অজয় নদী সংলগ্ন এলাকায় আসেন।অজয় নদীর তীরে রয়েছে পান্ডবঢিপি।আত্মগোপনের সময় তারা এইখানেই ছিলেন। এই এলাকাটি পঞ্চপান্ডব মন্দির হিসাবে বর্তমানে পরিচিত।পাটশাওড়া গ্রামের ভীমেশ্বর মন্দিরের সাথেও পঞ্চপান্ডবদের কাহিনী জড়িয়ে রয়েছে। অনেকের মতে পঞ্চপান্ডবরা যখন পাণ্ডবেশ্বর এসেছিলেন সেই সময় তারা ইছাপুর এলাকাতেও আসেন। পঞ্চপান্ডবদের মধ্যে ভীম সর্বপ্রথম এখানকার শিব লিঙ্গ দর্শন করেন। সেই কারণে বাবা ভীমেশ্বর শিব নামে মন্দিরের লিঙ্গটি পরিচিত হয়।
বর্তমানে মন্দির চত্বরে থাকেন এক সাধু । তিনিই মন্দিরের সেবাইত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেবাইত জানান মন্দিরের লিঙ্গটি জ্যোতির্লিঙ্গ।দেবতাদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত লিঙ্গকে জ্যোতির্লিঙ্গ বলা হয়। মন্দিরের লিঙ্গটি ভীমের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত বলে দাবি করেন তিনি। ভীমেশ্বর মন্দিরের সাথে জড়িয়ে আছে বহু অলৌকিক ঘটনার কথাও। মন্দিরের লিঙ্গ জাগ্রত বলে বিশ্বাস স্থানীয়দের ।