
কৌশিক বসু,দুর্গাপুর : কথায় আছে “জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর”। আর সেটাই লাগাতার করে আসছেন বেসরকারি ম্যানেজমেন্ট কলেজের হোস্টেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ওয়ার্ডেন শিহালি দাস বাগচী। শুক্রবার দুপুরের ঘটনা, দ্বিপ্রাহরিক আহার সেরে তিনি যখন হোস্টেলে ফিরছেন, তখন লক্ষ্য করেন বেশ কিছু সারমেয়ের গায়ে সজারুর কাঁটা বিঁধে রয়েছে এবং তারা রীতিমতো যন্ত্রণায় ছটফট করছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই ওই সারমেয়দের শুশ্রূষা করেন। এর পরেই তার নজরে পড়ে হোস্টেল কম্পাউন্ড এর প্রাচীরের ধারে একটি খোলা ম্যানহলে একটি সজারু পড়ে রয়েছে। সম্ভবত সারমেয়দের তাড়া খেয়েই ওই সজারুটি ম্যানহোলের মধ্যে ঢুকে গেছে।

শিহালি দাস বাগচী সঙ্গে সঙ্গেই বনদপ্তর সহ অন্যান্যদের খবর দেন। দুর্গাপুরের মুখ্য বনাধিকারিক বুদ্ধদেব মন্ডল দমকল সহ বনদপ্তর এর উদ্ধারকারী দল পাঠান। বিকেল পাঁচটা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত চলে উদ্ধার কার্য। এরপরেই সজারু টিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হয় উদ্ধারকারী দল এবং ওই প্রাণীটিকে দুর্গাপুর বনদপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। শনিবার সজারুটিকে কাঁকসার জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

বন আধিকারিক বুদ্ধদেব মন্ডল জানান যে একজন মহিলার সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা ও পশুপ্রেম একটি সজারুর জীবন ফিরিয়ে দিল। এভাবেই যদি মানুষ সচেতন হয় তাহলে অবলুপ্ত প্রায় প্রাণীরা রক্ষা পাবে বলে মন্তব্য বন আধিকারিকের।
অন্যদিকে শিহালী দাস বাগচী বনদপ্তর এর ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন , অত্যন্ত তৎপরতার সাথে সজারুটিকে উদ্ধার করে প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। সজারু টি ফের জঙ্গলে ফিরে যেতে পারবে, একজন পশুপ্রেমী হিসেবে তার কাছে এটাই বড় পাওনা বলে জানান তিনি।
দুর্গাপুর সহ সন্নিহিত জঙ্গলগুলিতে মাঝেমধ্যেই বিলুপ্তপ্রায় সজারুর খোঁজ মেলে। মানুষ যদি সচেতন হয় তাহলে নিশ্চিতভাবে এরকম বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী প্রাণে বাঁচবে এবং নতুন প্রজন্মের সাথে পরিচয়ও ঘটবে।