
কৌশিক বসু , দুর্গাপুর : হে মোর চিত্ত,পূণ্য তীর্থে
জাগো রে ধীরে–
এই ভারতের মহামানবের
সাগরতীরে…..সেই কবে লিখে গিয়েছিলেন কবিগুরু। কবিগুরু সম্প্রীতির এই ভাবনা ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন গোটা দেশ তথা বিশ্বে। সেই সম্প্রীতির একটুকরো ছবি উঠে এল দুর্গাপুরে। রামনবমীর মিছিলে হাঁটলেন মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই নজির নিশ্চিতভাবেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করল ।
ঘটনাস্থল , দুর্গাপুরের মেনগেট এলাকা। এখানের রিভারসাইট হনুমান মন্দির সেবা সমিতি আয়োজন করেছিল রামনবমী পালন। সকাল থেকেই উৎসাহ উদ্দীপনা ছিল তুঙ্গে। “জয় শ্রী রাম” ধ্বনিতে মুখরিত আকাশ বাতাশ। তারই মধ্যে দেখা গেল মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ সেই মিছিলে পা মিলিয়েছেন। এটাই এই বঙ্গ রাজ্যের সংষ্কৃতি,কৃষ্টি,ধ্যান,ধারনা । এলাকার কংগ্রেস নেতা তরুন রায়ের সাথে কাঁধে হাত রেখে রামনবমীর মিছিলে পা মেলালেন নাসিমুল্লা খান। নাসিমুল্লা খানের স্পষ্ট বক্তব্য , এই এলাকায় রামনবমী-মহরম একসাথে পালন করেন সব ধর্মের মানুষ। যারা কাপুরুষ ,তারাই হিন্দু মুসলমানের ভেদাভেদ করে, বললেন নাসিমুল্লা খান। গত প্রায় ২০ বছর ধরে এভাবেই এই অঞ্চলের সব ধর্মাবলম্বী মানুষ প্রতিটি উৎসব পালন করে আসছে , জানাচ্ছেন নাসিমুল্লা খান।
কংগ্রেস নেতা তরুন রায় জানান যে এই উৎসব সম্প্রীতির উৎসব , গোটা দেশের এটাই ছবি হওয়া উচিৎ। তিনি বলেন , “আমার থেকে বড় হিন্দু কেউ নেই , আবার আমার থেকে বড় মুসলিম কেউ নেই , ১৮ বছর ধরে আমি মহরম কমিটির সভাপতি”।
তবে সব দ্বিধা দ্বন্দ দুরে সরিয়ে যেভাবে এক মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ মেতে উঠলেন রামনবমীতে , নিশ্চিত ভাবে গর্বিত হতেন স্বয়ং রামচন্দ্র। এসো হে আর্য , এসো অনার্য, হিন্দু মুসলমান – কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই ভাবনার সফল প্রয়োগ আজ যেভাবে দুর্গাপুরে দেখা গেল , তা গোটা দেশে পবিত্র রামনবমীর ইতিহাসের পাতাকে উজ্জ্বল করল তাতে অন্তত দ্বিমত পোষন করা যাবে না।