৯৯ বাংলা নিউজ ডেস্ক: ফাঁপরে বঙ্গ বিজেপি। মিসড কল সদস্য খুঁজতে ব্যস্ত মুরলীধর সেন লেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে মোবাইলে যুক্ত হয়েছিলেন একাধিক কর্মী, তাঁদের মধ্যে এখন কতজন দলের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত, বঙ্গ নেতাদের থেকে এবার সেই পরিসংখ্যান দিতে হবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। যাঁরা অতীতে মিসড কলে সদস্য হয়েছিলেন, লোকসভা ভোটের আগে তাঁদের আসরে দেখতে চাইছে খোদ বিজেপি হাই কমান্ড । আর এতেই বেজাই ফাঁপরে পড়ছে বঙ্গ বিজেপি। কেন এত অস্বস্তি ? বঙ্গ বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। মুরলিধর সেন লেনের কাছে মিসড কল দেওয়া সদস্যদের সঠিক হিসেবই নেই, এরপরই প্রশ্নের মুখে পড়েছে বঙ্গ বিজেপি । একুশের বিধানসভা ভোটের আগে বঙ্গ বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছিল, এ রাজ্যে মিসড কল দেওয়া সদস্যের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ছুঁই ছুঁই। কিন্তু বঙ্গ বিজেপি সূত্রে খবর, এদের অধিকাংশকেই আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
তবে কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে উঠে এসেছে একাধিক তথ্য।
প্রথমত, সদস্য হওয়ার পর অনেকেই দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেনি।
দ্বিতীয়ত, মিসড কল দেওয়া বহু সদস্যের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করেনি রাজ্যের নেতারাও। তৃতীয়ত, অনেকেই আবার শাসক শিবিরে দলে যোগ দিয়েছেন। চতুর্থত, বহু সদস্য আবার মুখ ফিরিয়েছে সক্রিয় রাজনীতি থেকে । পঞ্চমত, কেউ কেউ আবার বদলে দিয়েছেন মোবাইল নম্বরই। আর এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফের মিসড কল দিয়ে সদস্য অভিযানে বঙ্গ বিজেপি। নতুন করে দলের ফেসবুক পেজে সদস্য হওয়ার আহ্বান জানিয়ে দশ অঙ্কের মিসড কল নম্বর প্রকাশ করাও হয়েছে বিজেপির তরফ থেকে।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে বঙ্গ বিজেপির অবস্থা খুব একটা আশানুপূর্বক নয়। নিচু তলার সংগঠন নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন চিহ্ন ইতিমধ্যেই রয়েছে। সম্প্রতি এক বৈঠকে বিজেপি নেতৃত্বের মুখে শোনা গিয়েছে, সভায় লোকজন আসছে। কিন্তু সেই সভায় আসা কর্মীরা যখন বুথে ফিরে যাচ্ছেন, তখন তাঁরা সেভাবে সক্রিয় থাকছেন না। এর কারণ হিসেবে অতীতে ভোট পরবর্তী হিংসার দগদগে ক্ষতর কথাই তুলে ধরে আসরে নামছে খোদ বিজেপি নেতৃত্ব। এমন অবস্থায় দলের অন্দরেই একাংশ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে যে দলে লোকবলের এই দুর্দশার হাল ফেরাতেই কি ফের নতুন করে মিসড কল দিয়ে সদস্য হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে রাজ্য বিজেপির তরফ থেকেই।
২০২১ বিধানসভানির্বাচনের আগে মোবাইল ফোনে মিসড কল দিয়ে গোটা দেশেই সদস্য হওয়ার ডাক যখন দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় বিজেপির তরফ থেকে, তখন বঙ্গ নেতারাও ঘটা করে সদস্য অভিযানেও নেমে ছিলো। রাজ্য নেতারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে দাবি করেছিলেন, বাংলায় মিসড কল দেওয়া সদস্য সংখ্যা প্রায় ১ কোটির কাছাকাছি। কিন্তু তাদের বড় অংশেরই হদিশ পেতে এখন হিমিশিম খেতে হচ্ছে দিলীপ-সুকান্ত-শুভেন্দুদের। ওই মিসড কল দেওয়া সদস্যদের মধ্যে কতজন সক্রিয়ভাবে দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সেই তথ্যটাও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে দিতে হবে। আর এটাই এখন বড় দুশ্চিন্তা মুরলীধর সেন এর কাছে।