
৯৯ ডিজিটাল ডেস্ক, পূর্ব বর্ধমান : জাল চালান তৈরি করে বালির চোরা কারবার চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার ৪।
প্রকাশ্যে বহু কোটি টাকার দুর্নীতি। বহু কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে জাল চালান তৈরি করে চলছিল বালির চোরা কারবার। পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষে পুলিশি তদন্তে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সরকারি ওয়েব পেজের আদলে নতুন ওয়েব পেজ তৈরি করে জাল চালান বানিয়ে চলছিল বালি পাচার। ভুয়ো চালান তৈরি করে বালির কারবার চালানোর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে পলেমপুর ও খেজুরহাটি এলাকা থেকে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে খণ্ডঘোষ থানার পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে ২ জন খণ্ডঘোষের কেশবপুর ও খেজুরহাটি গ্রামের বাসিন্দা। বাকি ২ জনের বাড়ি রায়নার জোৎসাদি ও বর্ধমানের লস্করদিঘী অঞ্চলে। ধৃতদের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বেশ কয়েকটি মোবাইল সহ বালির একাধিক জাল চালান। বেশ কয়েকটি জেলায় তারা এই অবৈধ কার্যকলাপ চালাচ্ছিল বলে জানা গেছে।
বালি পরিবহণের জন্য বৈধ চালান লাগে। এখানে জাল চালানের সঙ্গে দেওয়া হচ্ছিল ভুয়ো ওয়েব পেজের কিউআর কোডের লিঙ্ক। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মূলত দুটি উপায়ে চালান জাল করা হতো। বালির চালান সঠিক কিনা সেটা জানার জন্য চালানের মধ্যে কিউআর কোড থাকে। তা স্ক্যান করলেই সরকারি ওয়েবসাইট http:// mdtcl.wb.gov.in এর পেজ খুলে যাবে। তা দেখেই চালানটি সঠিক কিনা, তা যাচাই করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে পুলিশ ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিকদের চোখে ধুলো দিতে সরকারি ওয়েবসাইটের আদলে প্রতারকরা http:// mdtcl.wb-gev.in নামে ওয়েব সাইট খুলেছিল। জাল চালানের জন্য কিউআর কোড এই ভুয়ো ওয়েবসাইটের সঙ্গে লিঙ্ক করা থাকত। ফলে আধিকারিকরা কিউআর কোড স্ক্যান করলেই সহজেই সরকারি ওয়েবসাইটের আদলে ওয়েবপেজটি খুলে যেত। তাই, সরকারি ও জাল ওয়েবপেজের মধ্যে পার্থক্য সহজে করতে পারতেন না সরকারি আধিকারিকররা।
এছাড়াও আসল চালান স্ক্যান করে সেই চালানে গাড়ির নম্বর, সময়, নাম পরিবর্তন করে আপলোড করা হত। চালানে থাকা কিউআর কোডের লিঙ্কটি আপলোড করা ইমেজের সঙ্গে লিঙ্ক করে দেওয়া হত। ফলে কিউআর কোড স্ক্যান করলেই আপলোড করা এডিটেড ইমেজটি খুলে যেত। যেখানে সরকারি ওয়েবপেজের নামও থাকত। ফলে দ্বিতীয় উপায়ে চোখে ধুলো দিয়ে এডিটেড করা জাল চালান দেখিয়ে বালি পাচার করা হত।এভাবেই পুলিশ ও রাজস্ব দফতরের আধিকারিকদের চোখে ধুলো দিয়ে চলত বালি চুরির রমরমা কারবার।
এই চক্রের সঙ্গে আরও বড় কোনো মাথা জড়িত রয়েছে কিনা তা জানতে ৪ জনকে ৭ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়ে এদিন বর্ধমান আদালতে পেশ করে পুলিশ।
এবিষয়ে খণ্ডঘোষ থানায় সাংবাদিক বৈঠক করেন এসডিপিও বর্ধমান সদর (দঃ) সুপ্রভাত চক্রবর্তী। উপস্থিত ছিলেন খন্ডঘোষ থানার ওসি সুব্রত বেড়া সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা।