
অর্পণ ভট্টচার্য,৯৯ বাংলা নিউজ: হুগলির বলাগড়ের যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ গ্রেফতার হওয়ায় এবার তাকে দেওয়া টাকার কী হবে, তা নিয়ে উদ্বেগ ছড়াচ্ছে ব্লক জুড়ে। টাকা দিয়েও চাকরি না-মেলায় এতদিন তাঁদের কেউ পুলিশ বা কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছে কোনও অভিযোগ জানাননি। কুন্তল গ্রেফতার হওয়ায় টাকা নিয়ে উদ্বেগে এ বার তাঁরা মুখ খুলছেন। তবে নিজেদের নাম প্রকাশে এখনও তাঁদের আপত্তি রয়েছে।কারও দাবি, চাকরির জন্য তিনি তিন লক্ষ টাকা দিয়েছেন। কারও দাবি, পাঁচ লক্ষ। কেউ টাকার অঙ্ক মুখে না বললেও বুঝিয়ে দিচ্ছেন, সেটা নেহাত কম নয়। কেউ কেউ বলছেন, চাকরি না-মেলায় অল্প কিছু টাকা ফেরত পেয়েছেন। তবে বাকী টাকার অঙ্কটাও নেহাত কম নয়।
বলাগড়ের এক ব্যক্তি বলেন, কয়েক বছর আগে ছেলের চাকরির জন্য কুন্তলকে কয়েক লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। চাকরি হয়নি। কিছুটা টাকা ফেরত পেয়েছি। এখন বাকী টাকা ফেরতের কী হবে, সেটাই চিন্তার। আরেক চাকরিপ্রার্থীর প্রশ্ন, ‘‘উনি তো ধরা পড়লেন। টাকা কে ফেরাবে? চাকরি তো পাইনি।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়ানো বেসরকারি বিএড ও ডিএলএড কলেজ সংগঠনের সভাপতি তাপস মণ্ডলের দাবি, কুন্তল চাকরিপ্রার্থীদের থেকে বেশ কয়েক কোটি টাকা নিয়েছেন। গ্রেফতারের পরে কুন্তলের দাবি, ‘‘ আমি নির্দোষ। কারও থেকে টাকা নিইনি। তাপস মণ্ডল আমাকে ফাঁসিয়েছে।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, বাংলায় স্নাতক কুন্তল লাজুক ধরনের মানুষ। ধনেখালির ভান্ডারহাটিতে বিএড কলেজ তৈরির পরে প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন। এখন যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক। কুন্তলের বাবা, প্রয়াত স্বপন ঘোষ শ্রীপুর-বলাগড় পঞ্চায়েতের সিপিএমের প্রধান ছিলেন।
তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী, অধুনা হাজতে থাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগের সূত্রে শাসক দলের শীর্ষস্তরে ওঠাবসা ছিল কুন্তলের। নীলবাতির গাড়িতেও তাঁকে দেখা যেত। বাড়িতে সিভিক ভলান্টিয়ারের পাহারাও দেখা গিয়েছে অনেক সময়। হুগলিতে দলের অন্তত ছয় বিধায়কের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার কথা শোনা যায়।
জানা গিয়েছে, স্ত্রী-মেয়ে ও মাকে নিয়ে কুন্তল বছর সাতেক ধরে নিউ টাউনে থাকেন। বলাগড়ে আসেন কম। তবে, এলাকায় তাঁর ‘সমাজসেবী’ ভাবমূর্তি। তিনি যখন বলাগড়ের বাড়িতে আসতেন, চাকরিপ্রার্থীরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতেন।প্রতিবেশী এক মহিলা বলেন, ‘‘কুন্তলকে ভাল ছেলে বলেই জানতাম। সমাজসেবা করত। ওঁর গ্রেফতারের খবরে খুব অবাক হয়েছি।