
কৌশিক বসু , দুর্গাপুর : ধানবাদের কুখ্যাত ওয়াসেপুর , যেখানের গ্যাংওয়ার নিয়ে বিখ্যাত সিনেমা গ্যাঙস অফ ওয়াসেপুর বলিউডের অন্যতম হিট। সিনেমা রিলিজ হয়ে হিট হয়ে গেলেও গ্যাংওয়ার থামার কিন্তু কোন লক্ষনই নেই। ফাহিম খান বনাম প্রিন্স খান , এই দুই গ্যাংস্টারের লড়াই বিগত ২০১৭ সাল থেকেই। বুধবার রাতে তারই পুনরাবৃত্তি, ওয়াসেপুরের কালীমন্দির এলাকার গ্যাংওয়ারে এক গ্যাংস্টারের মৃত্যু হয়েছে , অপরজন গুরুতর জখম হয়ে ভর্তি দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতালে। আহতের নাম ইকবাল খান , ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে ইকবালের সঙ্গী ঢোলু খানের । ধানবাদ পুলিশ ঘটনার তদন্তে দুর্গাপুরে এসেছে।

বুধবার রাতে ওয়াসেপুরের কালীমন্দির এলাকায় ইকবাল খান ও তার সঙ্গী ঢোলু খানের ওপর গুলি চালায় কয়েকজন দুষ্কৃতী। ইকবাল খান , গ্যাংস্টার ফাহিম খানের বড় ছেলে । প্রথমে ওই শ্যুটারদের সাথে বচসা হয় ইকবাল ও তার সঙ্গীর , এরপরই শ্যুটাররা গুলি চালায়। গুলিতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ঢোলু খানের , গুরুতর আহত অবস্থায় ইকবাল খানকে প্রথমে ধানবাদের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ও পরে দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন ইকবাল খান। হাসপাতাল সুত্রে খবর, পেটে গুলি লেগেছিল , অপারেশন করে গুলি বের করা হয়েছে , অবস্থা স্থিতিশীল।

ইকবাল খানের ভাই রাজ্জান খানের অভিযোগ প্রিন্স খানের গোষ্ঠীর ঋত্বিক ওরফে আরশাদ খান গুলি চালিয়েছে , এমনটাই সে দাদা ইকবালের কাছে জানতে পেরেছে। সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিল , তাদের চিনতে পারেনি দাদা, বক্তব্য ভাই রাজ্জান খানের। ঘটনার সময় ইকবাল,ঢোলু ও সোনু খান ছিল , এরমধ্যে সোনু খান একজনকে জাপটে ধরে নেয় , কিন্তু সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তবে ঝাড়খন্ড পুলিশের ওপর আস্থা রাখছে ফাহিম খানের পরিবার।
অন্যদিকে আহত ইকবাল খানের মাসতুতো ভাই হাকিব জানান যে ২০১৭ সাল থেকেই ফাহিম খান ও প্রিন্স খানের মধ্যে দ্বন্দ , সম্পর্কে এরা মামা ভাগ্নে। এর আগে ইকবাল খানকে একাধিকবার প্রানে মারার হুমকি দিয়েছে প্রিন্স খান,অভিযোগ হাকিবের। সম্পত্তি ও শুধুমাত্র ক্ষমতার লড়াই , এই গ্যাংওয়ারের মুল কারন বলে জানালেন ওই পরিবারের সদস্য হাকিব।

ঘটনার তদন্তে দুর্গাপুরে এসেছে ঝাড়খন্ডের পুলিশ। সুত্রের খবর ইকবাল খানের জ্ঞান ফিরলে তাকে জিজ্ঞাসা বাদ করতে পারে ধানবাদের পুলিশ। অন্যদিকে প্রিন্স খান গোষ্ঠীর তরফ থেকে একটি হুমকি চিঠি ভাইরাল করা হয়েছে স্যোশাল মিডিয়ায়।

জনৈক মাজের খান ও লালা খানের নাম দিয়ে এই হুমকি চিঠি ভাইরাল করা হয়। বুধবার রাতের হত্যাকান্ডের ঘটনার দায় স্বীকার করে এই হুমকি চিঠিতে বলা হয়েছে , যারা যারা ইকবাল খানের সাথে সম্পর্ক রাখবে ,তাদেরও এই হাল হবে। স্বভাবতই এই হুমকি চিঠি ঘিরে ধানবাদ পুলিশের কপালে চিন্তার ভাঁজ। তবে এই গ্যাংওয়ারে ধানবাদ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এত বছর ধরে চলা গ্যাংওয়ার কেন পুলিশ নিয়ন্ত্রন করতে পারছে না ,এই প্রশ্ন কিন্তু ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে।