
কাউন্সিলারকে কি সবসময় পাশে পান? রাস্তা লাইট সরকারি অন্যান্য পরিষেবা ঠিকঠাক পাচ্ছেন? সিপিআইএম বা অন্য বাম কর্মীদের পাশে পান??? এইরকমই ১৮ টি প্রশ্নমালা তৈরী করে এবার মানুষের দুয়ারে সিপিআইএম কর্মী সমর্থকরা। দুর্গাপুরে ৪৩ টি ওয়ার্ডে এইরকম কিছু প্রশ্নমালার হ্যান্ডবিল ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়ে একটি করে ড্রপ বক্স নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে এলাকার কোনো একটি জায়গাতে।এবার সেখানে এই প্রশ্নের উত্তরগুলি মাল্টিপল চয়েসের আকারে টিক মার্ক দিয়ে ড্রপ বক্সে ফেলে জনতা তার মনের কথা জানাবে। নভেম্বর মাসের দশ তারিখ সমস্ত ড্রপ বক্স একসাথে নিয়ে গিয়ে খোলা হবে সিল। নয় নয় করে কমবেশি প্রায় ছ থেকে সাতশোর মতো ড্রপ বক্স হয়েছে গোটা দুর্গাপুর শহরে, দশ তারিখ সিল খুলে মিলবে জনতা জনার্দনের রায়। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে দুর্গাপুর নগর নিগমের পাঁচ বছরের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হয়েছে । বছর ঘুরলেই দুর্গাপুর নগর নিগমের ৪৩ টি ওয়ার্ডের নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে মানুষের মন জানতে বামেদের এই অভিনব কৌশল। দুয়ারে সরকার ছিল তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাস্টার স্ট্রোক । তাহলে কি জনতা জনার্দনের মন বুঝতে সেই পথেই এবার বামেরাও? উত্তরে সিপিআইএমের জেলা সম্পাদক মন্ডলী সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলছেন, এতা আত্মসমালোচনার একটা রাস্তা কারন মানুষের পাশে একমাত্র বামেরাই আছে । কিন্তু ভোটলুট সন্ত্রাসের যে অভিযোগ বামেরা বারে বারে তুলেছে,সেক্ষেত্রে এই ড্রপ বক্সের নিরাপত্তা কোথায় ? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান যে সাধারন মানুষ সারাদিন এই ড্রপ বক্স রক্ষা করবে , রাতে কুকুর বা গরুর হাত থেকে বাঁচতে সুরক্ষিত স্থানে রাখা হবে। তবে অমানুষের মতন শাসক দল দ্বারা যদি এই বক্সের কোন ক্ষতি হয় , তাহলে সেই এলাকায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে সাধারন মানুষ ব্যাপক প্রতিরোধ ও সমাবেশ করবে। যেহেতু আত্মসমালোচনার প্রসঙ্গ রয়েছে , তাই জেলা নেতৃত্বের সামনেই এই ড্রপ বক্স খোলা হবে বলে জানান এই বাম নেতা ।

বামেদের দুয়ারে পৌঁছে যাওয়ার এই কৌশলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি ও তৃণমূল। দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ চন্দ্র ঘোড়ুই বলেন, দুর্নীতিতে ডুবে যাওয়া তৃণমূল কর্মীরা নেত্রীর বলার পরও এখন অপমানের ভয়ে মানুষের দুয়ারে পৌঁছতে পারছে না,সিপিআইএম কর্মী সমর্থকরা তাই তৃণমূলের দায়িত্ব বি টীম হয়ে নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছে, এর চেয়ে লজ্জার আর কি বা হতে পারে, বামেদেরও এবার দূর দূর করে তারবে মানুষ, কারণ এই কৌশল অবলম্বন করে বামেরা নিজেদের বিপদ ডেকে আনছে, কারণ মানুষ আবার ৩৪ বছরের বামেদের কুকীর্তিও স্মরণ করবে যেটা তারা ভুলতে বসেছিল । এই ইস্যুতে কটাক্ষ তৃণমূল নেতৃত্বের। দলের জেলা নেতা রাজীব ঘোষের তোপ ,ইস্যু না পেয়ে বিজেপি বাম এক হয়ে কাজ করছে, আর তৃণমূল তো মানুষের পাশে থেকে উন্নয়নের কর্মকাণ্ডে মেতেছে।
পৌরসভা নির্বাচনের আগে সিপিআইএমের এই ড্রপ বক্স কর্মসূচী যে শহরে ব্যাপক আলোড়ন ফেলেছে , তা বলাই বাহুল্য ।