
দিব্যেন্দু ঘোষ, ৯৯ বাংলা: গত কয়েক দিন ধরে নেট দুনিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল। ফেসবুকের টাইম লাইন জুড়ে ভাইরাল সেই ভিডিও। অনলাইনে খাবার ডেলিভারি দিতে গিয়েই ভাইরাল সেই মেয়ে। কে এই মেয়ে? তিনি জানান তিনি পৌলমী অধিকারী(Poulami Adhikari)। কে এই পৌলোমী? কোথায় বাড়ি তার? এসব উত্তর খুঁজতে গিয়ে বেড়িয়ে এলো এক চাঞ্চল্যকর খবর। তিনি একজন ফুটবলার। একসময় ভারতের হয়ে খেলেছেন৷ বাড়ি বেহালার শিবরামপুরে। আর্থিক অনটনে ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নে অচিরেই বাধা পড়েছে। মা মারা গিয়েছেন ছেলেবেলায়। কোনওমতে সংসার চালান বাবা। বাবার মুখে হাসি ফোটাতে অনটনের সংসারে এবার হাল ধরেছেন নিজেই। তাই বাধ্য হয়েই ফুটবল ভুলেছেন তিনি। বাই বাই করেছেন ভালোবাসার খেলা ফুটবল কে৷ রোজগারের টানে এখন ফুটবলার পৌলমী থেকে হয়ে উঠেছে ডেলিভারি গার্ল পৌলমী। ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নকে পিছনে ফেলে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বাড়ি বাড়ি খাবার সরবরাহ করার কাজে নেমে পড়েছেন জনৈক ফুটবলার পৌলমী। চারুচন্দ্র কলেজে পড়াশোনা করলেও, কোভিডের কারণে মাঝপথেই থেমে গিয়েছে পড়াশুনার পাঠ।তৃতীয় বর্ষের পর আর সুযোগ মেলেনি পড়াশুনার।
স্বপ্ন ছিল জনৈক ফুটবলার হওয়ার। কথায় আছে স্বপ্ন থাকলেও সাধ্য থাকতে হয়। কিন্তু পৌলমীর সাধ থাকলেও সাধ্য নেই। সংসারের হাল ধরতেই কিছুটা বাধ্য হয়েই অনলাইনে খাবার সরবরাহকারী সংস্থার কাজে নেমে পড়ে পৌলমী। দিনে কখনও ৪০০, কখনও ৫০০ টাকা রোজগার হয়। কখনও দিনভর কাঁধে ভারী ব্যাগ নিয়ে ছুটেও জোটে না অর্থ সারাদিন ঠিক করে খাওয়া জোটে না। একরাশ আক্ষেপের সুরে পৌলমী বলে দিলেন, ‘কোচিং লাইসেন্স থাকলেও ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নকে এখনও পুরোপুরি জলাঞ্জলি দিতে পারিনি। পরিস্থিতির চাপেই আজ এই জায়গায়। এখান থেকে কি কখনও বেরোতে পারব?’ হাজার স্বপ্ন উল্টোদিকে চরম আর্থিক অনটন দুই মেরুতে দাঁড় করিয়েছে পৌলোমী কে।
একটা পৌলমী নয়, তাঁর মতো হাজার হাজার পৌলমীর একটাই প্রশ্ন, কবে মিলবে যোগ্যদের সম্মান। মেয়ে বলেই কি ব্রাত্য পৌলমী? অশ্রুসজল চোখে বলে ওঠে, ‘হয়তো তাই। না হলে এতদিনে হয়তো লাইমলাইটের আলোয় থাকতাম।’ এত যন্ত্রণা যাঁর, তিনি আজও ফুটবলের মধ্যেই খুঁজে পান তাঁর তৃপ্তি। সুযোগ পেলে পাড়ার মাঠে আজও নেমে পড়েন ফুটবল পায়ে। এ যেন এক আত্মার টান। পৌলমীদের একটাই দাবি , সরকার এই প্রতিভাবানদের খুঁজে বের করে উপযুক্ত ব্যবস্থা করুক। ৯৯ বাংলার আবেদন সরকারের কাছে,এদের মুখে হাসি ফুটুক পায়ে উঠুক ফুটবল।