
কৌশিক বসু,দুর্গাপুর : বেতন হওয়ার কথা মাসের পয়লা তারিখে , কিন্তু ২ তারিখ হয়ে গেল , এখনও বেতন হয় নি কর্মীদের । বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন রাজ্য সরকারের অধীনস্থ দুর্গাপুর প্রোজেক্ট লিমিটেডের কর্মীরা। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহর জুড়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান উতোর। ডিপিএল এর ৩২০ জন কর্মীকে সম্প্রতি” ডেপুটেশনে” পাঠানো হয়েছে অন্যত্র। ডেপুটেশন এ্যালাওয়েন্স তো দুর অস্ত , মার্চের মাস মাইনেই মিলল না , ফলে এদিন সকাল থেকে ডিপিএল প্রশাসনিক ভবনের সামনে ধর্নায় বসল কর্মীদের একাংশ। বাঁকুড়ায় খাদ্য দপ্তরে বদলি হয়েছেন নিমাই কর্মকার , তাঁর অভিযোগ সরকার তাদের ভবিষ্যত সুনিশ্চিত করতে বদলির সিদ্ধান্ত নিয়েছে , কিন্তু ডিপিএল কতৃপক্ষের গাছাড়া মনোভাবের কারনে তাঁদের বদলি ভাতা সহ বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধে মিলছে না । একাধিক বার কতৃপক্ষকে জানালেও কাজ হচ্ছে না বলে জানান ডিপিএলের এই কর্মী। অন্যদিকে অপর কর্মী জামিউল ইসলাম জানান যে অবিলম্বে তাদের বেতন সহ অন্যান্য ভাতা না দিলে তাঁরা আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য , কয়েক মাস আগেই ডিপিএল কতৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয় যে প্রায় ৮১০ জন কর্মীকে তারা অন্যত্র বদলি করে দেবে। তার মধ্যে ৩২০ জন কর্মীকে বিভিন্ন জেলার খাদ্য দপ্তর বদলি করে দেয় ও বাকি ৫১০ জনকে রাজ্য বিদ্যুৎ সংবহন দপ্তর ও রাজ্য বিদ্যুৎ পরিবহন দপ্তরে বদলি করা হয়। গত জানুয়ারী মাসেই এদের বিভিন্ন জেলার সরকারী দপ্তর গুলিতে বদলি করে দেয় ডিপিএল। কর্মীরা সেই সব স্থানে কাজে যোগও দিয়ে দেয়। কিন্তু তারপর থেকেই নিয়মমাফিক তাদের বদলি ভাতা তারা পায়নি এবং চলতি মাসে বেতনও মেলেনি। আন্দোলনরত কর্মীদের দাবি , হয় তাদের ভাতা সহ বেতন দেওয়া হোক , না হয় তাদের অন্য জেলায় কর্মস্থলে পৌঁছানোর জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হোক নতুবা তাদের খাতায় কলমে হাজিরার ব্যবস্থা করুক কতৃপক্ষ।

এ প্রসঙ্গে ডিপিএলের জন সংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্র স্বীকার করে নেন যে “ফান্ড ক্রাইসিস” এর জন্য কর্মীদের বেতন হয়নি , তবে খুব শীঘ্রই তাদের বেতন হয়ে যাবে। শুধু বদলিতে যাওয়া কর্মীরাই নন , তাঁদেরও বেতন হয়নি বলে জানান এই আধিকারিক। এছাড়া কর্মীদের অন্যান্য দাবি দাওয়া লিখিত আকারে পেলে কতৃপক্ষ নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবে বলে আশ্বাস দেন জন সংযোগ আধিকারিক।
এই ঘটনাকে ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন যে এই সরকার যে দেউলিয়া হয়ে গেছে , এই ঘটনা আর একবার প্রমান করল। তাঁর কটাক্ষ, সরকার ডিএ তো দিতে পারছেই না , উল্টে বেতন দিতেও ভাঁড়ে মা ভবানী অবস্থা।
৩ নং ব্লক আইএনটিটিইউসির সভাপতি কল্লোল ব্যানার্জী বলেন , ডিপিএল কতৃপক্ষের কিছু “অসৎ” লোকের উদাসীনতার কারনে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। রাজ্য সরকার মানবিক বলেই কর্মীদের কাজ সুনিশ্চিত করতে বদলিতে পাঠিয়েছিল। আন্দোলনরত কর্মীদের প্রতি দল সহানুভুতিশীল। তিনি খুব শীঘ্রই ওপর মহলে কথা বলে এই সমস্যার সুরাহা করবেন।