
৯৯ ডিজিটাল ডেস্ক, পুরুলিয়া : “আজ আমি কোনও ডায়ালগ দিতে আসিনি, শুনতে এসেছি”, পুরুলিয়ার জনসভায় এসে এমনই মন্তব্য করলেন ‘মহাগুরু’।
পুরুলিয়ার লুধুড়কার জনসভায় এদিন একেবারে অন্য ভূমিকায় দেখা গেল মহাগুরু-কে। প্রথমেই আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপিকে জেতানোর আবদার করে তিনি বলেন, “পুরুলিয়া জেলা কমিশন আমরা পেলে আবার আমি এখানে আসব।” এরপরই জনসভায় উপস্থিত মানুষের সমস্যার কথা জানতে চান। জনসভায় উপস্থিত জনগণ অবশ্য এদিন মহাগুরুকে নিরাশ করেননি। তাঁরাও বিজেপিকে জেতানোর প্রতিশ্রুতি দেন।

এ দিন মহাগুরু বলেন, “আজ আমি কোনও ডায়ালগ দিতে আসিনি, আপনাদের কথা শুনতে এসেছি। আপনাদের যা জিজ্ঞাসা করার আছে, করুন। যার যা মনের দুঃখ-কষ্ট আছে, বলবেন।” এরপরই জনসভায় উপস্থিত সকলের সমস্যার কথা শোনেন তিনি। ‘মহাগুরুকে’ কাছে পেয়ে অনেকেই আবাস যোজনার ঘর না পাওয়ার ক্ষোভ উগরে দেন। তাঁদের আশ্বস্ত করে বিজেপি নেতা বলেন, “সড়ক যোজনা, ১০০ দিনের কাজের টাকা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর- সব পাবেন। কেউ বঞ্চিত হবেন না।” তবে ১০০ দিনের কাজের টাকা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর না পাওয়ার জন্য নাম না করে রাজ্য সরকারকেই দুষলেন মিঠুন। কয়েক মাস ধরেই কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না বলে একাধিকবার অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রকাশ্যে এনিয়ে বার বার মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছিল। আর বুধবার টাকার হিসেব নিয়ে রাজ্য সরকারকেই নিশানা করলেন মিঠুন।
এদিন তিনি বলেন, “ঘরে ঘরে পোস্টারে বাংলার আবাস যোজনা করে দিয়েছে। যে টাকা পাঠাবে কাকে পাঠাবে? আমি বলছি, সেন্ট্রাল বলছে আগে হিসেব দিন। উঁনি বলছেন আমাদের পয়সা দিচ্ছে না, আমি কী করে দেব।” এরপর বুঝিয়ে তিনি বলেন, “আপনি ধরুন রামকে টাকা দিয়ে বাজারে পাঠালেন। রাম ফিরে এলে তার থেকে হিসেব চাইবেন না? যা পয়সা দিলেন তার তো হিসেব থাকে। যদি বলেন ওটা তো শ্যাম দেখে শ্যামকে দিয়ে দিন। আপনি কি শ্যামকে দেবেন? দেবেন না। রামের টাকা রামকেই দেবেন।”

নাম না করে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে মিঠুন আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনার টাকা সেই আবাস যোজনার ব্যাঙ্কেই আসবে। আপনি পোস্টার মারলে কী করে হবে? এখন সবাই স্বীকার করছে সড়ক যোজনা, আবাস যোজনা যা কাজ হচ্ছে কেন্দ্র করছে। সব পাবে। ওখানকার লোক এসেছে। সব হিসেব আছে। সব টাকা পাবেন। প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনার টাকা সবাই পাবেন। কিছু দিনের জন্য টাকা আটকে রাখা এই জন্য কারণ রাজ্য সরকারকে হিসেব দিতে হবে। এটা জনগণের টাকা। সবাইকে হিসেবে দিতে হবে।”
পাশাপাশি, এদিন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে অপমান করার প্রসঙ্গ টেনে আদিবাসী আবেগকে উস্কে দেন মিঠুন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “পুরুলিয়ায় অনেক আদিবাসী আছে। আমাদের প্রধান নাগররিককে যে ভাষায় অপমান করেছে, পুরুলিয়াবাসী যেন এই অপমান না ভোলে।”

বছর ঘুরলেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর তার জন্য এখন থেকেই জোরদার প্রচারে নেমেছে বিজেপি। সেই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করেই যে মহাগুরুর একের পর এক নিশানায় এদিন রাজ্য সরকারের প্রসঙ্গ উঠে এলো, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। মিঠুনের ভোকাল টনিক জেলা পুরুলিয়ার বিজেপি নেতৃত্বের কাছে একমুঠো ‘অক্সিজেন’।